ইয়াসিনুর রহমান: চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাস পাওয়ায় তার নিজ জেলা নেত্রকোণায় আনন্দ মিছিল হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লুৎফুজ্জামানের নির্বাচনী এলাকা নেত্রকোণা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) ছাড়াও জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই আনন্দ মিছিল করেন।
রায় ঘোষণার পর পরই মদন উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়কগুলো ঘুরে মদন সরকারি হাজি আবদুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মিষ্টি মুখ করা হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. নূরুল আলম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুল হেলিম, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইদুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি মো. সাইফ আহমদ ছাত্রদলের সভাপতি এসএইচ পিপুল, সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হাসান প্রমুখ।
এ দিকে, বিকেল চারটায় নেত্রকোণা শহরের ছোটবাজার এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে একই এলাকায় শেষে হয়। পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নেতা-কর্মীরা।মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান তালুকদার, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজেজুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম মনিরুজ্জামান দুদু, সাবেক সাংগঠনিক এসএম শফিকুল কাদের, যুবদল নেতা ফারদিন চৌধুরী রিমি, ওয়ারেস উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর বিএনপি সরকারের আমলে সফল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তিনি নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও নিজ জেলায় বহু মানুষকে চাকরিসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করায় জননন্দিত নেতা হিসেবে পরিচিত হন। তাকে গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্রসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে ১৭ বছর ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মামলার রায়ে তাঁকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে গ্রেনেন্ট হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ এসব বিভিন্ন মামলা থেকে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করায় নেতা-কর্মীরা খুশি হয়েছেন। এতে সত্যের জয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আর যেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে তা থেকে অবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোণা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) আসন থেকে তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া সব এলাকার প্রচুর উন্নয়ন করেন। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের দায়ে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন। এ ছাড়া মামলাটিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর ৬ আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আপনার মতামত লিখুন :