বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণায় ছাত্রদল কর্মী মো. আমজাদ হোসেন (২৭)কে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যার প্রতিবাদে ও তৎকালীন ওসি বোরহান উদ্দিনসহ দায়ীদের বিচারের দাবীতে বুধবার বিকেলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। শহরের মুক্তারপাড়া এলাকায় পৌরসভার সামনের সড়কে এই মানববন্ধন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ মে রাত ৩টার দিকে নেত্রকোণা মডেল থানার তৎকালীন ওসি বোরহান উদ্দিন ও এসআই মামুনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ছাত্রদল কর্মী আমজাদের বাড়ি ঘেরাও করে আটক করে ১০ মিনিটের মতো তাদের নিয়ে মহল্লার মধ্যে ঘোরাতে থাকে। আমজাদকে চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়ে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার মেদনি ইউনিয়নের বড়ওয়ারি সেতু এলাকায় মাদক উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে আমজাদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। নিহত আমজাদ নেত্রকোনা শহরের হোসেনপুর এলাকার মৃত আলী হোসাইনের ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। স্থানীয় ও কেন্দ্রঘোষিত সব কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক।
নিহত আমজাদের ভাই দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘বিচারবহির্ভূতভাবে আমার ছোট ভাই আমজাদকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে মাদক ব্যবসার অভিযোগ এনে তৎকালিন ওসি বোরহান উদ্দিনসহ অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ সদস্য গুলি করে হত্যা করেছেন। মামলার উল্লেখিত আসামিরা তখন নেত্রকোনা সদর থানায় কর্মরত থাকায় বিপদের আশঙ্কায় মামলা করতে সাহস পাইনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন খান জানিয়েছিলেন, খুন, অস্ত্র, বিস্ফোরক, দ্রুত বিচার, চুরি, মাদকসহ ১৩টি মামলার আসামি ছিলেন আমজাদ। মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করে তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালানো হলে তিনি পুলিশের ওপর হামলা চালান। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
নিহত আমজাদের ভাবি স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘আমার দেবর কোনো দিন একটি সিগারেটও খায়নি। এলাকায় খবর নেন। সে কোনো মানুষকে নির্যাতন করেছে কেউ বলতে পারবে না। যে মামলাগুলো সব রাজনৈতিক মামলা। বিএনপি করত বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করি ন্যায়বিচার পাব।’
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, আমজাদ ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সর্বশেষ রাজনৈতিক মামলায় আমার সঙ্গে আসামি ছিলেন। তার কোনো অপরাধ থাকলে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী বিচার করা যেত। এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সাথেযারা জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী করেন তিনি।
এঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডভোকেট নুরুজ্জামান নুরু, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার জাহান এলিন, সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :