প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে গ্রেপ্তার মো. নোমান সিদ্দিকী বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর কথায় নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রীর কথা ছাড়া কোনো কাজই করতেন না। সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরিতে থাকা অবস্থায় তার তেমন সম্পত্তি না থাকলেও সেখান থেকে অবসর নেওয়ার পর অপকর্মে জড়িয়ে বর্তমানে প্রচুর সম্পদ গড়েছেন তিনি। এমনটি দাবি করেছেন নোমানের বড় ভাই মো. ফারুক।
নোমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবু তাহের মিয়ার ছোট ছেলে।
নোমানের বড় ভাই চর আলগী ইউনিয়নের রামদয়াল বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘নোমান উপজেলার চর মেহের আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৮ সালে সেনাবাহিনীতে সাধারণ সৈনিক (জিডি) হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরির পর তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের বিদ্যুৎ কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাফিয়া সুলতানা স্বর্নাকে বিয়ে করেন। সাফিয়া সুলতানা স্বর্না ঢাকার মিরপুরে শিক্ষা অধিদপ্তরে চাকরি করতেন। বর্তমানে তিনি গৃহিনী। বিয়ের পর থেকে নোমানের সঙ্গে পরিবারের কারো সম্পর্ক নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা আবু তাহের মিয়া জীবিত যখন ছিলেন তখন মাঝে-মধ্যে গ্রামে আসতেন নোমান। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে বাড়িতে তিনি আসতেন না। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছিলেন। তার নামে যতো সম্পত্তি রয়েছে তার চেয়ে বেশি সম্পত্তি স্ত্রীর নামে পাবনার ঈশ্বরদীতে থাকতে পারে। তিনি যা কিছু করেছেন, সবই স্ত্রীর কথায় করেছেন। স্ত্রীর কথা ছাড়া কোনো কাজই করতেন না নোমান।’
গ্রেপ্তার নোমান সিদ্দিকীর গ্রামের বাড়ি
বুধবার (১০ জুলাই) সরেজমিনে নোমান সিদ্দিকীর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নোমানের বাড়িটি আধাপাকা। বাড়িটি তার বাবা আবু তাহের মিয়া তৈরি করেছেন। এর পাশেই রয়েছে একটি টিনশেডের বাড়ি। এখানে বর্তমানে বসবাস করেন নোমানের দুই ভাই মো. ফারুক মিয়া ও মেজো ভাই মো. সালা উদ্দিন। বাড়ির পশ্চিমে মেঘনা নদী। গ্রামে নোমানের একটি মাছ চাষের পুকুর ছাড়া অন্য কোনো সম্পত্তির তথ্য দিতে পারেননি এলাকাবাসী।
চর আলগী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী জানান, নোমান সিদ্দিকী তার প্রতিবেশী। গ্রামে তার একটি মাছ চাষের পুকুর ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি আছে বলে জানা নেই। নোমানের এত সম্পদ ও জাল জালিয়াতির কথা তিনি আগে কখনো জানতেন না। ভাই বোন ও ভগ্নিপতিদের কারো সঙ্গেই তার সম্পর্ক ভালো ছিল না।
গ্রামের স্কুল শিক্ষক সাহাব উদ্দিন জানান, ঈদে নোমান ছিদ্দিকী বাড়িতে আসলে ২-৩দিন থেকে চলে যেতেন। কারো সঙ্গে মিশতেন না। তিনি গ্রামে তেমন সম্পত্তি করেননি। তার বাবা মৃত আবু তাহের ছিলেন সাধারণ মানুষ। তিনি কৃষি কাজ করতেন। তারা তিন ভাই। বড় ভাই মো. ওমর ফারুক রামদয়াল বাজারে ফার্মেসি ব্যবসা করেন ও মেজো ভাই মো. সালা উদ্দিন সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। নোমান সিদ্দিকী ভাইদের মধ্যে ছোট।
নোমানের ভাই ওমর ফারুক বলেন, ‘পারিবারিকভাবে নোমানের সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই। বিয়ের পর থেকে তিনি ঢাকায় থাকেন। তার তিন সন্তান রয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার আগ থেকে পারিবারিক সম্পর্ক বিছিন্ন রয়েছে। কখনো বাড়িতে আসলে তিনি একা থাকতেন। পরিবারের কারো সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না। গ্রামের তার তেমন কোনো সম্পত্তি নেই। যা কিছু রয়েছে বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি। এছাড়া তার ব্যাপারে তোমন কিছুই জানা নেই আমাদের।’
আপনার মতামত লিখুন :