Banglarnetro
Dr. Neem Hakim

মোহনগঞ্জে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩


বাংলার নেত্র প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ৬:৩৫ অপরাহ্ণ / ৫৩৫
মোহনগঞ্জে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক কিশোরী (১৭) কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে প্রেমিকসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ ওই তিন ধর্ষণকারীকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠিয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষণকারীরা হলো- পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের নিজগাবি গ্রামের মো. শাহজাহান মেম্বারের ছেলে আজিজুল ইসলাম (২২), দুলাল মিয়ার ছেলে মো. রফিক (২৪), মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাকিব মিয়া (২৬)। তারা সকলেই নির্মাণ শ্রমিক (রাজ মিস্ত্রি)।
মামলার বিবরণ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোহনগঞ্জ পৌরশহরের একটি এলাকার বাসিন্দা এক কিশোরী (১৭) কওমি মাদ্রাসার ছাত্রী। বর্তমানে সে পড়াশোনা বন্ধ রেখে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিল। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের নিজগাবি গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে আজিজুল ইসলামের সঙ্গে ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। এরপর থেকেই আজিজুলের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত দুই মাস ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আজিজুল ওই কিশোরীর সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা বলতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ এপ্রিল রাত আটটার দিকে আজিজুল তার সহযোগী মো. রফিককে নিয়ে বিয়ের আলোচনা করতে ওই কিশোরীর বাড়িতে যায়। পরে আজিজুল ও রফিক তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে কিশোরীকে পার্শ্ববর্তী বারহাট্টায় পরিচয় করাতে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তাতে ওই কিশোরীর মা তার মেয়েকে আজিজুলের সঙ্গে যেতে মানা করেন। পরে আজিজুল অন্যত্র গিয়ে পূর্বে ধারণকৃত তাদের ব্যক্তিগত কিছু ছবির বিষয়ে ব্লাকমেইল করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে ওই কিশোরী আজিজুলের সঙ্গে দেখা করতে ওই রাতে পৌনে বারোটার দিকে আলোকদিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় যায়। পরে আজিজুল ও রফিক ওই কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলযোগে ধর্মপাশা উপজেলার শিংরা বাজার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ধানক্ষেতে ওই ছাত্রীকে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে সেখানে তারা সাকিবকে আসতে বললে সেও ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও তা ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ওই কিশোরী গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে অসুস্থ ওই কিশোরীকে নিয়ে আজিজুল ও রফিক মোটরসাইকেলযোগে ওই স্থান ত্যাগ করে বারহাট্টা উপজেলার অতিথপুর রেলস্টেশনে গিয়ে অবস্থান করে। এসময় সাকিব অন্যত্র চলে যায়। পরে আজিজুল ও রফিক ওই কিশোরীকে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের কাজিয়াটি এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। পরে আজিজুল ইমোতো ফোন দিয়ে ওই কিশোরীকে জানায় যে, তার কাছে ধর্ষণের ভিডিও রয়েছে। এমনকি পরিবারের কাউকে কিছু জানালে খুন-গুম করারও হুমকি দেয় আজিজুল। পরে এই ঘটনার পর ওই কিশোরীর বড় ভাই থানায় জিডি করলে পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের ধরতে মঙ্গলবার রাতভর ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আজিজুল, রফিক ও সাকিবকে পৃথক স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তিন ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণকারীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। গতকাল দুপুরে ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে এবং তিন ধর্ষণকারীকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সারাদেশ বিভাগের আরো খবর

আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর