বিশেষ প্রতিনিধি. নেত্রকোণায় পৃথক তিনটি মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আর চার ব্যক্তিকে পাঁচ বছরের সাজাপ্রদান করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোণা অতিরিক্ত দায়রা জজ-প্রথম আদালতের বিচারক এএফএম মারুফ চৌধুরী এই রায় প্রদান করেন। রায় প্রদানকালে পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার পূর্বধলার জালশুখা গ্রামের কামাল হোসেন (৩৫) ও দুর্গাপুরের বারমারী লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. মমতাজ (৪৮)। আর পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন, হবিগঞ্জের চুনারোঘাট উপজেলার ইকরতলী গ্রামের মো. জামাল মিয়া (৩৪), শাকিব মিয়া (২৭), মো.বেলাল মিয়া (৫২) ও মো. ফিরোজ আহমেদ (২৫)।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুরের বারমারী লক্ষ্মীপুরের মো. মমতাজ তার স্ত্রী মালেকা বেগমকে (৩৪) জমি লিখে দেয়ার কথা বলে ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল ঢাকার পল্লবী এলাকার বাসা থেকে দুর্গাপুরে নিয়ে আসেন। পরদিন সন্ধ্যায় পুলিশ বারমারী পাহাড় সংলগ্ন এলাকা থেকে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুদিন পর মামলা করে। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত আজ দুপুরে মো. মমতাজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্ধদণ্ড করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলেন জানান রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত কৌঁশলী কমলেশ কুমার চৌধুরী। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল কাদির ভূঁইয়া জানান, এ রায়ে আসামি পক্ষ সন্তুষ্ট নন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এ দিকে, ২০১৮ সালের ২৪ জুন সন্ধ্যায় শহরের কুড়পাড় এলাকায় পুলিশ ১৭০ গ্রাম হিরোইনসহ মাদক ব্যবসয়ী কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় ওই দিন রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে একই আদালত আজ দুপুরে কামাল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্ধদণ্ড করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলেন জানান রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত কৌঁশলী মাজহারুল হক খান। আসামি পক্ষের আইনজীবী শিবলী সাদিক অপু জানান, রায়ের বিরুদ্ধে আসামির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
অপর দিকে, ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর রাতে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে ২৬ কেজি গাঁজাসহ জামাল মিয়া, শাকিব মিয়া, বেলাল মিয়া ও ফিরোজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পরের বছরের ১৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ আদালত প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সাজা প্রদান করেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্ধদণ্ড করা হয়। অনাদায়ে আরও এক মাসের জেল প্রদান করা হয়। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে অনুউপস্থিত ছিলেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজম খান।
আপনার মতামত লিখুন :