সিলেট প্রতিনিধি. সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক যুগান্তর ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের বাসায় ডুকে হামলা চেষ্টা ও স্ব পরিবারের হত্যার হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানবন্ধন কর্মসুচী পালন করলেন সংক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালিত হয় সোমবার বিকেলে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গেল ১১ ও ১২ জুলাই দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় অনলাইন ও প্রিন্ট ভাসর্নে এবং এরপর বাংলা ইনসাইডারে ইউএনও’র বদলি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ১২ জুলাই শুক্রবার বিকেল ০৫.৩০ মিনিটে দৈনিক যুগান্তর ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডের বাসায় অনধিকার পূর্বক প্রবেশ করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন তার দলবল নিয়ে।
এরপর সাংবাদিক আজাদকে ডেকে তালাবন্ধ কেচি গেইটের ভেতরে থাকা অবস্থায় ইউএনও, জাদুকাটা নদী সেতু , ভুমিমন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত জাদুকাটা নদীতে ড্রেজার জব্দ ও ড্রেজার মালিকদেও গ্রেফতারের নির্দেশ , বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ি জব্দ করণ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদীর বালু উক্তোলন সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুগান্তরের প্রকাশের কারন জানতে চেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার সাথে থাকা দলবল কেচি গেইট খুলে হামলার অপচেষ্টা করে।
ভবিষ্যতে যুগান্তরে কোন ধরণের সংবাদ প্রকাশ কিংবা তথ্যের জন্য থানার ওসি -ইউএনওকে ফোন করলে পরিবারের সকল সদস্য সহ সাংবাদিক আজাদকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চেয়ারম্যান আফতাব লোকজন জড়ো হতে দেখে তার দলবল নিয়ে বাসার গেইটের সামনে থেকে চলে যায়।এরপর থেকেই চেয়ারম্যান আফতাব ও তার দলবলের হুমকির মুখে সাংবাদিক আজাদ ও তার সহধর্মীনী সপ্রাবি শিক্ষক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ দাবি করে বক্তারা বলেন, অবিলম্ভে হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক যাতে করে কোন দুবৃক্তদের দল ভবিষ্যতে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক-শিক্ষক দম্প্রতিকে স্বপরিবারে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখার অপচেষ্টা থেকে সড়ে আসে।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক আজাদ ও তার পরিবারের সদস্যদেও নিরাপক্তা জোরদার করা ও অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করে আনার দাবি তুলেন সরকার প্রধান ও আইনশুংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর নিকট।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, এলাকাবাসীর পক্ষে সমাজসেবক সামসু মিয়া, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, সারোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আলীম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক এম এ রাজ্জাক, হাসান বশির, রাহাদ হাসান মুন্না, আব্দুল মান্নান, রোকন উদ্দিন, সাবজল হোসাইন প্রমুখ।
উপজেলার কামড়াবন্দ, বাদাঘাটবাসী সহ উপজেলার একাধিক গ্রাম থেকে আসা মানুষজন, সাংবাদিক, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্ধ উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনের প্রতি সহমত পোষণ করেন।
প্রসঙ্গত, ইউএনও’র বদলি সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাড়াও এরপুর্বে ধারাবাহিকভাবে দৈনিক যুগান্তরে ও বাংলা ইনসাইডারে ‘জাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুতে ড্রেজারের ধাক্কায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি , ড্রেজার মেশিন জব্দ ও ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতারে ভুমিমন্ত্রীর নির্দেশ, বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ির চালান জব্দ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উক্তোলন এবং নৌপথে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন ও প্র্রতিবাদ সমাবেশের একাধিক ভিডিও সহ একাধিক প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ও বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব নিজেই মুঠোফোন এবং বিভিন্ন সময় তার লোকজন দিয়ে বিভিন্নভাবে সাংবাদিক হাবিব সরোয়ার আজাদকে আর কোন ধরণের প্রতিবেদন যুগান্তর কিংবা বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশ ও ওসি-ইউএনও সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপজেলার বিভিন্ন নৌকাঘাটের, হাটবাজার ইজারা সংক্রান্ত তথ্য না নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি প্র্রদান করেন।
বুধবার দুপুরে উপজেলার সপ্রাবি শিক্ষক, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাংবাদিক আজাদের সহধর্মীনী জানান, আইনশৃংখলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার মুখেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে গেল শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপক্তাহীনতায় মধ্যে বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি।
উল্লেখ ঘটনার পর রাতেই সাংবাদিক আজাদ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপক্তা চেয়ে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব সহ তার দলবলে থাকা অজ্ঞাতনামাদের ব্যাপারে থানায় জিডি করেন।
আপনার মতামত লিখুন :