Banglarnetro
Dr. Neem Hakim

নেত্রকোণায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রাসেলের পরিবার পেল জায়গাসহ ঘর


বাংলার নেত্র প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ৭:০৫ অপরাহ্ণ / ২৪
নেত্রকোণায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রাসেলের পরিবার পেল জায়গাসহ ঘর

বিশেষ প্রতিনিধি: বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত কাভার্ড ভ্যানের সাহায্যকারী রাসেল মিয়ার (১৯) পরিবারকে জমিসহ ঘর করে দেয়া হচ্ছে। নেত্রকোণা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বারহাট্টার শাসনউড়া মৌজায় ১০ শতক সরকারি জমিতে একটি আধাপাকা ঘর করে দেয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিকেলে তার মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঘর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এর আগে বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন নিহত রাসেল মিয়ার কবর জিয়ারত করেন।

এতে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, জেলা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, জেলা সিভিল সার্জন অনুপম ভট্টাচার্য্য, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি, প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ শিহাব উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়দুল্লা খান, সমাজসেবা অফিসার এস.এম. গোলাম হোসাইন, নেত্রকোনা জেলা সমন্বয় শেখ হাসনাত জনি, বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার, বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুুদ আলম ফকির, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল বাসির, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদর উপজেলার ফাহিম পাঠান সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ।

নিহত রাসেল মিয়া নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওই গ্রামের মো. মুন্সী মিয়া ও কুলসুমা আক্তার দম্পতির তৃতীয় সন্তান। গাজীপুরের মাওনায় মোরগবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান গাড়িতে সাহায্যকারী ছিলেন রাসেল মিয়া।


স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন রাসেল মিয়া পরিবারের অভাব দূর করতে কিশোর বয়স থেকেই কাজে যোগ দেন। তাঁর আয়েই চলতো চার সদস্যের পরিবার। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত হন তিনি। নিজেদের ভিটেমাটি না থাকায়, রাসেলের লাশ দাফন করা হয় তাঁর চাচার জমিতে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে রাসেলের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে প্রশাসন। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগদ ৩৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। এ ছাড়া গতকাল বুধবার বিকেল ১০ শতক জমিসহ প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধাপকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় কমিশনারের তহবিল থেকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।


রাসেলের মা কুলসুমা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে হারিয়েছি। তাকে আর কখনো ফিরে পাবো না। সে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটা আমার গর্ব। আমি চাই আমার ছেলেসহ যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছে তাদেরকে যেন শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়। আমার আরেক ছেলে আছে তাকে যেনো একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আমারে জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, আন্দোলনে নিহত রাসেলের পারিবারের দুরবস্থার বিষয়টি জেনে তার পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনার স্যারের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকাসহ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হবে।’

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, ‘বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেত্রকোনায় যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রাসেল মিয়ার পরিবারটি হত দরিদ্র। তাদের নিজস্ব কোন জমি-ঘর না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ শতক জমি ও একটি আধা পাকা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে।’

লিড নিউজ বিভাগের আরো খবর

আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর