বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণার দুর্গাপুরে মো. আবদুর রফিক ওরফে রহিত (২৮) হত্যার দায়ে আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রোববার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন বলে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁশলী আবুল হাসেম। তিনি জানান, যাবজ্জীবন রায়ের পাশাপাশি হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে গুম করার দায়ে ওই আটজনকে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ওই উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কাকড়াকান্দা গ্রামের ইসমাইল মিয়া, কাজল মিয়া, মজিবর রহমান, আশ্রাব আলী, ছামেদুল মিয়া, শাহজাহান মিয়া, নজরুল মিয়া ও নুরুল আমীন। নিহত আবদুর রফিক গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম নন্দেরছরি গ্রামের মো. আবদুল মোতালেবের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষিকাজ করতেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আবদুল মোতালেবের বিয়ের কয়েক বছর পর তার শ্বশুরবাড়ি কাকড়াকান্দা গ্রামে চলে যান। সেখানে তিনি বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন।ওই সময় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছিল। নির্বাচনে কাকড়াকান্দা গ্রাম থেকে মো. হাবিবুর রহমান ও মো. তোতা মিয়া নামের দু’জন প্রার্থী হন। রফিক মিয়া হাবিবুর রহমানের সমর্থক ছিলেন। এ নিয়ে তোতা মিয়ার সমর্থক মো. ইসমাইল, কাজল মিয়াদের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল।
২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি বোরো খেতে পানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন বিকেলে স্থানীয় চিনাকুড়ি বিলে তোতা মিয়ার একটি বোরো খেতে মাটির নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার দুই দিন পর এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি থানার উপপরিদর্শক (এস আই) তাজাম্মেল হক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার বিচারক এ রায় প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে আসামি পক্ষের আইনজীব জাহিদুল হাসান জানান, এই রায়ে আসামি পক্ষ সন্তুষ্ট নন। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :